দূষণ, কোলাহল আর যান্ত্রিকতার বাইরে কোন জীবন হতে পারে তা হয়তো ঢাকাবাসীর পক্ষে আন্দাজ করা এ সময় সম্ভব নয়। কিন্তু এমন এলাকা ও গ্রাম আছে যেখানে দূষণ, কোলাহল আর যান্ত্রিকতা বহুদূরের কোন গল্পের মতো। হ্যাঁ, অবাক করার মতো হলেও সত্যি যে, এমনও গ্রাম আছে যেখানে নেই কোন যান্ত্রিক গাড়ির কালো ধোঁয়া। ধোঁয়া আসবেই বা কীভাবে, যদি কোন গাড়িই না থাকে। গাড়ির তো প্রশ্নই আসে না। কারণ সেই গ্রামে গাড়ির জন্য কোন রাস্তাই নেই! গল্প নয়, পৃথিবীতেই এমন একটি গ্রামের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যা নেদারল্যান্ডে অবস্থিত। গ্রামের নাম গিয়েথর্ন। গ্রামজুড়ে নেই কোন রাস্তা। শুধু আছে চার মাইল লম্বা খাল, সরু ফুটপাত আর ছোট ছোট কাঠের ব্রিজ। সেই খালেও চলে না কোন যান্ত্রিক স্টিমার বা স্পিড বোট। এর কারণ, খালটি খুবই সরু এবং এর গভীরতাও খুব কম। তাই বিশেষ ধরনের নৌকাই হল এ গ্রামের প্রধান বাহন। এ ছাড়াও সাইকেল আর হেঁটেই যে যার গন্তব্যে যায়। এ দূষণ ও গাড়িবিহীন গ্রাম এখন পর্যটকদের তীর্থভূমিতে রূপ নিয়েছে। সবাই কোলাহলমুক্ত কিছু সময় কাটাতে ওই গ্রামে ঘুরতে যায়। সাইকেল আর নৌকা দিয়ে ঘুরে বেড়ায় পুরো গ্রাম আর উপভোগ করে কোলাহল আর দূষণমুক্ত জীবন। জানা গেছে, ১২৩০ সালে ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে পলাতক কিছু কারাবন্দি ওই গ্রামে গিয়ে বসতি স্থাপন করেন। এর থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ওই এলাকার জনবসতি। তবে এলাকাটি প্রথম সবার নজর কাড়ে ১৯৫৮ সালে।
ওই গ্রামকে ডাচ পরিচালক বার্ট হানসট্রা তার ছবি ‘ফানফেয়ার’র লোকেশন হিসেবে বেছে নেন। এরপর থেকেই পর্যটকদের আনাগোনা বেড়ে যায় গিয়েথর্নে। এখন পর্যন্ত পর্যটকের সেই ভিড় কমেনি, বরং দিন দিন আরও বেড়েই চলছে।
0 comments:
Post a Comment